সৈয়দ ছিফত আলী রহ. এর জীবনী

সৈয়দ ছিদ্দেক আলী রহ. সাহেবের সুযোগ্য উত্তরসূরী, ভাড়েরা পীর সাহেবদের বংশ ধারায় জন্ম নেয়া এক যুগ সৃষ্টিকারী আধ্যাত্ম সাধক সৈয়দ ছিফত আলী রহঃ সাহেব পিতার পদাংক অনুসরণ করেন। 

অতি অল্প বয়সেই (১২ বৎসর বয়সে) পবিত্র কোরআন হিফজ করতে সক্ষম হন। সবাই তার মধ্যে ভবিষ্যতের তারকাদ্যূতি লক্ষ্য করতে শুরু করেন। কিন্ত মাত্র ১২ বৎসর বয়ক্রম কালে হট করে একদিন তিনি নিখোঁজ হয়ে গেলেন। অনেক খুজাখুজি করেও তার কোনো সন্ধান পাওয়া গেলোনা। তখনকার দিনে পায়ে হাঁটা আর নৌকা নির্ভর যাতায়াতের দিনে কাউকে খুজাখুজি করে বের করা মহামুশকিলের ব্যাপার ছিলো।

একে একে এক যুগ অথ্যাৎ ১২টি বৎসর অতিবাহিত হয়ে গেলো। সৈয়দ ছিফত আলী সাহেবের কথা সবাই প্রায় ভুলতে বসেছেন। এমন সময় হঠাৎ একদিন তিনি চলে এলেন। দিনটি ছিল শুক্রবার। গ্রামের বেশ কিছু লোক পীর বাড়ীতে কোন এক উপলক্ষে উপস্থিত। হঠাৎ দেখা গেলো একটি গাছ সহ ছিফত আলী সাহেব বাড়ীতে উপস্থিত হয়েছেন। তার হাতে একজোরা পাথর। এ প্রসঙ্গে অন্য আরেক সূত্রে প্রাকাশ যে, দীর্ঘ ১২ বৎসর কোনো এক অজ্ঞাত স্থানে তার মুর্শিদের সাথে কাটিয়ে মুর্শিদের দেয়া ‘হাড়কুছিয়ালা’ গাছ সহ কুরআন তেলাওয়াত করতে করতে বাড়ীতে এসে হাজির হন। সাথে এক জোড়া পাথর। তখন ফজরের ওয়াক্ত। তিনি উচ্চস্বরে আজান দিতে থাকেন। আশ পাস এলাকার বসবাসরত হিন্দু লোকজন আজানের উচ্চ শব্দে কিছুটা উত্তেজিত হয়ে পীর বাড়ীতে উপস্থিত হয়ে দেখতে পান ১২ বৎসর পূর্বেকার নিখোঁজ হয়ে যাওয়া। কিশোর ছিফত আলী পূর্ণাঙ্গ যুবকে পরিণত হয়ে বাড়ি ফিরে এসেছেন। তদোপরি নতুন বেশভুষা ও আকর্ষণীয় আচরণ। লোকজন তার শিষ্যত্ব গ্রহন করতে শুরু করলো। তার নাম ডাক চতুর্দিকে ছড়িয়ে পরলো। তার সাথে আনা ‘হাড়কুছিয়ালা’ গাছ রোপন করা হলো। সঙ্গে আনা একজোরা জীবন্ত পাথর যত্নের সাথে রাখা হলো । যা থেকে পরবর্তীতে একাধিক পাথর জন্ম লাভ করেছে।

ভাড়েরা পীর সাহেবদের ভক্ত মুরিদানদের কাছে সবচেয়ে প্রচলিত ধারণা যে, তিনি ১২ বৎসর আরব এলাকা , বিশেষ করে ইয়ামেন অঞ্চলে কোনো অজ্ঞাত স্থানে আধ্যাত্মিক সাধনায় কাটিয়ে আসেন। তার আনীত এই ‘হাড়কুছিয়ালা’ পৃথিবীর আর কোথাও খুজে পাওয়া যায় না বলেই সবার অনুমান।

ভাড়েরা পীরবাড়ীর আধ্যাত্মিক চিকিৎসা বলতে গেলে তাহার সময় থেকেই শুরু। তাদের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য হচ্ছ পাগল চিকিৎসা ।মানসিক ভারসাম্যহীন বিভিন্ন বয়সী রোগী নিয়ে লোকজন ভীড় জমাত সারা সৎসরই। ছিফত আলী সাহেব আনিত ‘হাড়কুছিয়ালা’ গাছ কিংবদন্তীতে রুপ নেয়। বিভিন্ন পর্যায়ে বিভিন্ন স্থান এ গাছের বিস্তার ঘটানোর জন্য অনেকে অনেকবার চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

একবার বৃটিশ সরকার নির্দেশ দেন এ গাছ কেটে ফেলার জন্য। তাদের আতংক ছিলো এ গাছের চিকিৎসার গুনের কারণে এ বাড়ীর লোকজন জন সাধারণের মধ্যে প্রভাব বিস্তার করে নিলে এক সময় এই প্রভাব তাদের বিরুদ্ধ ব্যবহৃত হয়ে যেতে পারে। সরকারী নির্দেশে গাছ কাটার জন্য লোক এলো। গাছে কোপ দিতে গিয়ে দেখা গেলো কসের বদলে গাছ থেকে রক্ত ঝরছে। গাছ কাটার নিযুক্ত শ্রমিক,এসব প্রত্যক্ষ করে রাষ্ট্রীয় লোকজন ক্ষমা প্রার্থী হয়। এ ঘটনার ফলশ্রুতিতে বুঝা যায় তারা আধ্যাত্মিক বলে বলিয়ান।