বিশেষ লেখা

হারিকেন পাসের ভবিষ্যদ্বাণী 

22, Sep, 2021

স্বাধীনতার পরবর্তী এক ইউনিয়ন নির্বাচন চলছে। বালাগঞ্জ উপজেলার দয়ামির ইউনিয়নের চেয়ারম্যানপদে ক’জন ঝানু প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন। একজনের প্রতিক দোয়াত-কলম, একজনের ছাতা, একজনের হক্কা এবং একজনের প্রতিক ছিল হারিকেন। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতা চলছে। কে হারে কে জেতে অনুমান করা কঠিন হচ্ছে।  হারিকেন প্রতিক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী একজন সাধাসিধে ধরনের লোক। তিনি খুব অর্থশালী নন এবং তার কোন সন্তানাদি ও নেই। স্ত্রী ও বৃদ্ধা মাকে নিয়েই তার সংসার। তিনি গভীর রাতে একা একা নির্বাচনী প্রচারণা চালাতেন। কোন লোকজন সাথে রাখতেন না। এ নিয়ে তার মায়ের খুব ভয় ছিলো। এক মায়ের এক ছেলে অত্যন্ত প্রভাবশালী প্রতিদ্বন্দ্বীদের সাথে তার ছেলে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করছে। একা একা গভীর রাতে ঘুরে কি জানি কি হয়। মায়ের মন সব সময় অজানা আশংকায় দূরু দূরু করে।
নির্বাচনের পূর্ব রাত্রের ঘটনা উদ্বেগ উৎকন্ঠায় মা রাত জেগে বসে আছেন। ছেলের প্রতীক্ষায়। ঘরের দাওয়ায় জলন্ত হারিকেন। নিরব নিস্তব্ধ রাত। হঠাৎ কার পদ শব্দে মা সচকিত হয়ে উঠলেন। আশা জাগলো ছেলে হয়তো এসেছে। কিন্ত না ! এ যে ভাড়েরার পীর সাহেব হুজুর! চার/পাঁচ মাইল দূর থেকে পায়ে হেটে এ অন্ধকার শীতের রাত্রে তিনি এখানে এলেন কেন? বৃদ্ধ পীর সাহেবকে চেনেন। আশ পাশের মুরিদানদের বাড়ীতে আশা যাওয়াতে তার কাছে পরিচিত ছিলেন পীর সাহেব।
পীর সাহেব সৈয়দ বসারত আলী বৃদ্ধার দাওয়ায় রাখা হারিকেন হাতে নিয়ে উন্মুত্তের মতো চিৎকার করা শুরু করলেন পাশ। হারিকেন পাশ!! উত্তেজিত হয়ে এলোপাতারি হাটছেন আর চিৎকার করছেন।  পরদিন নির্বাচনের ফলাফল বের হতেই দেখা গেলো হারিকেন প্রতিক বিজয়ী হয়েছে।